একজন আদর্শবান নেতা জিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নেতারা কীভাবে অনুগামী হন? এটি এমন কী যা সাধারণ পুরুষ এবং মহিলাদেরকে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখাতে সক্ষম করে তুলে? লোকেরা কেন কোনো ব্যক্তিকে নেতার খেতাব দেয়? একটি সাধারণ কারণ:
মানুষকে নেতা তৈরি করা হয় কেননা তারা এমন ব্যক্তি যারা সম্ভবত সংগঠনটিকে বিজয়ের দিকে পরিচালিত করে। নেতৃত্ব সংগঠনকে বিজয়ী করে তুলে। নেতৃত্বের প্রধান কাজ হলো বিজয়।
এজন্যই যখন প্রতিষ্ঠানে দক্ষত প্রশ্নবিদ্ধ হয় বা দল হারতে থাকে, তখন তারা প্রথমে সিইও বা কোচকে প্রতিস্থাপন করে এমন কোনো ব্যক্তির উপর আস্থা স্থাপন করে যে তাদেরকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
জনগণকে বিজয়ের দিকে পারিচালিত করার এবং আপনার দল যে জিততে পারে এ বিশ্বাস জাগিয়ে তোলার আপনার দক্ষতা নেতা হিসেবে আপনার শক্তির মূল চাবিকাঠি।
নেতারা শ্রেষ্ঠত্ব এবং মানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কেননা শ্রেষ্ঠত্ব এবং মানের নেতৃত্ব জয়ের দিকে ধাবিত করে।
আপনি যখন আপনার পণ্য বা পরিষেবা নিয়ে মার্কেটপ্লেসে যান, আপনার লোকেরা এমন জিনিস চায় যা তারা শ্রেষ্ঠভাবে উপস্থাপন করতে পারবে।
গুণগতমান্ বেং সার্ভিস খুব গুরুত্বপূর্ণ। নেতারা বিশ্বাস করেন, তাদের সংগঠন সেরা হতে সক্ষম। এবং তাদের লক্ষ্য হলো তাদের সংস্থাকে শীর্ষস্থানীয় করা।
এক নম্বর রাখা সবার শীর্ষে সেরা হিসেবে রাখা।
অন্য কারো মতোই ভালো নয় বা অন্য কারো মতো মন্দও নয়, তবে সবচেয়ে ভালো। পরিশেষে, নেতারা সাফল্যের দিক থেকে ভাবেন। তারা সব সময় সাফল্য নিয়ে চিন্তা করেন। আমরা যদি সার্বক্ষণিক সাফল্যের কথা চিন্তা করি তবে আমরা সফলতা হবে অনিবার্য। আপনার প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা যদি ক্রমবর্ধমান বিক্রয় এবং মুনাফা, ব্যয় হ্রাস, এবং সমৃদ্ধির বিষয়ে মনোনিবেশ করে তবে বাজারে আসবে সাফল্য এবং তারাও সফল হবে।
সামরিক কৌশল থেকে পাঠ
একজন সামরিক নেতার একটি লক্ষ্য রয়েছে বিজয়। অনেক ব্যবসায়ী নেতা সামরিক নেতাদের নিকট থেকে এবং সামরিক কৌশল থেকে অনুপ্রেরণা এবং দিকনির্দেশনা পান। আমি যেমন আমার বই ‘ভিক্টোরি’-তে লিখেছি, কয়েকটি সামরিক কৌশল ও নীতি যে কোনো ক্ষেত্রে বিজয় আনতে পারে। এখানে সেই নীতিগুলো এখানে দেওয়া হলো :
১ মূল উদ্দেশ্যঃ
সামরিক নেতারা অভিযানের লক্ষ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ স্পষ্ট। এ বিষয়টি নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা থাকতে পারে না। ব্যবসায়ের জন্য, একই স্বচ্ছতা এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা প্রয়োজনীয়। আপনার কর্মচারীদের প্রত্যেককে অবশ্যই জানতে হবে যে তাদেরকে কী করতে হবে। যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের মতো তাদেরও জয়ের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।
২ আক্রমণাত্মক মূলনীতি
নেপোলিয়ন বলেছিলেন, “ডিফেন্সিভ থেকে কোনো বড় যুদ্ধে জয়লাভ করা যায় না। নেতারা এতটা নিরাপদে খেলেন না; কী হয় তা দেখার জন্য তারা অপেক্ষা করেন না। তারা বাইরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। নির্বোধ না হয়ে তারা আক্রমণাত্মক থাকেন এবং যুদ্ধের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন।
৩ জনগণের মূলনীতিঃ
এটি আপনারবাহিনীকে কেন্দ্রীভূত করার প্রশ্ন। যেখানে আপনার সেরা মানুষ, আপনার সেরা শক্তি এবং আপনার সেরা সংস্থান রয়েছে- যেখানে আপনার পক্ষে সবচেয়ে বড় বিজয়ের সেরা সুযোগ রয়েছে। টার্নআরআও নেতারা প্রায়শই প্রতিষ্ঠানের প্রতিভাগুলোর কাজকর্ম পুনর্গঠন করেন যাতে ফলাফলে পুনরায় ফোকাস দিয়ে কোম্পানিকে তার হেরে যাওয়া পরিস্থিতির বাইরে নিয়ে যেতে পারেন।
৪ ম্যানুভাবের মূলনীতিঃ
বেশির ভাগ যুদ্ধেক্ষেত্রের বিজয় কমান্ডারদের কাছ থেকে আসে যারা শত্রুদের চেয়ে সংখ্যায় অনেক কম থেকেও প্রায়শই সামান বা পিছন দিক থেকে আক্রমণ করে। যুদ্ধেক্ষেত্রের বাইরে, কৌশলের নীতিটি সৃজনশীলতা এবং নমনীয়তা বুঝিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, সম্ভবত এর অর্থ হলো একটি হেরে যাওয়া সংস্থাকে বিজয়ীতে পরিণত করতে আপনি এখন যা করছেন তার ঠিক বিপরীত কাজ করবেন।
৫ গোয়েন্দা মূলনীতিঃ
নেতারা তথ্য পান । তারা জানেন যে তথ্যই শক্তি। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সমস্ত তথ্য পাওয়া প্রয়োজন।
৬ কনসার্টেড অ্যাকশনের মূলনীতিঃ
যখন দলের প্রত্যেকে ভাগ করে নেওয়া লক্ষ্য এবং মূল্যবোধ দ্বারা চালিত হয়, তখনই বিজয় আসে। অন্যরা কী করছে এবং কেন করছে তা সবাই জানে। প্রত্যেকেই জানে যে পুরো দলটি লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
৭ প্রিন্সিপাল অফ ইউনিটি অফ কমান্ডঃ
যে কোনো সামরিক অভিযানে, একজন নেতা থাকা দরকার। তিনি হবেন এমন এক ব্যক্তি যিনি চূড়ান্তভাবে এ অভিযানের সাফল্যের জন্য দায়ী। এটি বেসরকারি প্রচেষ্টাগুলোতেও প্রযোজ্য, বিশেষত কোনো সঙ্কটের সময়। নেতারা এ জাতীয় পরিস্থিতিতে পরিষ্কার করেন যে তারা দায়িত্বে রয়েছে এবং সমস্যার সমাধানে কাজ করছেন।