অটো সাজেশন

অটো সাজেশন

অবচেতন মনকে প্রভাবিত করার মাধ্যম ধনী হওয়ার তৃতীয় পদক্ষেপ অটো সাজেশন হলো এমন একটি টার্ম যা সব সাজেশনকে উদ্দীপিত করে তোলে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে মানুষের মনে পৌঁছে দেয় । অন্যভাবে বলা যায় অটো – সাজেশন হলো সেলফ – সাজেশন । এটি হলো মনের মধ্যে যোগাযোগের একটি পন্থা যেখানে সচেতন চিন্তা – ভাবনাগুলো আশ্রয় নেয় এবং যা অবচেতন মনের আযকশনের জন্য কাজ করে ।

সচেতন মনের মাঝে বিদ্যমান কর্তৃত্বপরায়ণ চিন্তা – ভাবনাগুলোর ( এগুলো ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক পারে ) ভেতর দিয়ে অটো – সাজেশন পৌঁছে যায় অবচেতন মনের কাছে এবং এসব ভাবনা দিয়ে তাকে প্রভাবিত করে ৷ কোনো চিন্তা – ভাবনা হোক সেটা নেগেটিভ বা পজেটিভ অটো সাজেশনের প্রিন্সিপালের সাহায্য ছাড়া অবচেতন মনের ভেতর প্রবেশ করতে পারে না । প্রকৃতি মানুষকে এমনভাবে গড়ে তুলেছে যে তার সেসব মেটেরিয়ালের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে যা তার পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার অবচেতন মনে পৌঁছে ।

তবে অনেক মানুষই এটি অনুশীলন করে না বলে তাদের দিন কাটে দুঃখ – দুর্দশায় । ধরে নিন অবচেতন মন হলো একটি উর্বর বাগান যেখানে কাঙ্ক্ষিত শস্য রোপণ না করা হলে ভরে উঠবে আগাছায় । অটো – সাজেশন হলো নিয়ন্ত্রণের একটি মাধ্যম যার সহায়তায় যে কেউ অবচেতন মনে সৃজনশীল চিন্তা – ভাবনা প্রবেশ করাতে পারে অথবা একে অগ্রাহ্য করে ধ্বংসাত্মক প্রকৃতির চিন্তা প্রবেশের অনুমতি দিতে পারে আপনার মনের সমৃদ্ধ বাগানে ।

আকাঙ্ক্ষা নামক অধ্যায়টিতে যে ছয়টি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে তার লিখিত স্টেটমেন্ট আপনাকে দিনে দুইবার করে জোরে জোরে পাঠ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে যেখানে অর্থের জন্য আপনার আকাঙ্ক্ষা বক্ত হবে আপনি দেখবেন এবং অনুভব করবেন যে আপনি কাঙ্ক্ষিত অর্থের মালিক বনে গেছেন ।

এই নির্দেশগুলো মেনে চলে আপনি আপনার আকাঙ্ক্ষা’র অভীষ্ট উদ্দেশ্যের সঙ্গে অবচেতন মনের সরাসরি যোগাযোগ ঘটাবেন যার ভিত্তিমূলে রয়েছে পরিপূর্ণ বিশ্বাস । আকাঙ্ক্ষার অধ্যায়ে ফিরে যান যেখানে ছয়টি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে । সামনে এগোবার আগে এগুলো অত্যন্ত সাবধানে আবার পাঠ করুন । এভাবে বারবার পাঠ করলে আপনার অবচেতন মন এগুলো গ্রহণ করবে এবং সে অনুযায়ী কাজও।

করবে । এ বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ই বারবার পাঠ করে হৃদয়ঙ্গম করা উচিত । কারণ আপনি যদি বিষয়টি বুঝতে না পারেন , সামনে এগোবেন কী করে । আর বুঝতে না পেরে যারা অটো – সাজেশনের সূত্রগুলো অনুসরণ করতে যায় তারা আসলে কিছুই লাভ করতে পারে না । সাদামাটা আবেগহীন শব্দাবলী অবচেতন মনে কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে না । মনে বিশ্বাস না থাকলে অবচেতন মনে আপনি আপনার ভাবনাগুলো যথাযথভাবে প্রেরণ করতে পারবেন না । প্রথমবারে যদি আপনি আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণ কিংবা করতে না পারেন , হতাশ হবেন না ।

মনে রাখবেন কষ্ট ছাড়া না। অর্থাৎ পরিশ্রম না করলে কিছুই পাবেন না।অবচেতন মনের কাটে পৌঁছা তাকে প্রভাবিত করা সবকিছুরই একটা মূল্য আছে । এবং আপনাকে শোধ করতেই হবে।কোনো কিছু আকাঙ্ক্ষা করলে তা নিয়ে ঠগবাজি করতে যাবেন না।কম মূল্যে কিন্তু আকাঙ্ক্ষিত সামর্থ্যর উন্নতি করা সম্ভব নয় ।

আপনি একমাত্র আপনার নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি যার জন্য ক্ষুধার্ত তার জন্য কিছু দেবেন কী দেবেন না । অটো – সাজেশনের মূলসূত্রে বা প্রিন্সিপাল ব্যবহার করা নির্ভর করবে আপনি কাঙ্ক্ষিত কোনো কিছুর ওপর কতটুকু মনোযোগ দিতে পারছেন এবং সেই আকাজকাটি যতক্ষণ পর্যন্ত না তীব্র অবসেশনে পরিণত হয় ।

আপনি যখন দ্বিতীয় অধ্যায়ে বর্ণিত ছয়টি পদক্ষেপের সঙ্গে জড়িত নির্দেশগুলো পালন শুরু করবেন তখন মনোযোগের সূত্রগুলো ব্যবহার করাও আপনার জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে । মনোযোগের কার্যকর ব্যবহার সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দেয়া যাক । আপনি যখন ছয়টি পদক্ষেপের প্রথমটি অনুসরণ করতে যাবেন যেখানে আপনাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে  আপনি ঠিক কী পরিমাণ টাকা চাইছেন তা আগে মনে মনে ঠিক করে নিন । সেখানে আপনি টাকার পরিমাণের ওপর নিজের চিন্তাকে কেন্দ্রীভূত করুন চোখ বুজে দেখার চেষ্টা করুন সেই পরিমাণ অর্থ ।

এ কাজটি প্রতিদিন অন্তত একবার করুন।এ অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার সময় বিশ্বাস এর অধ্যায়ে যেসব নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা অনুসরণ করুন এবং দেখুন যে ঠিক ওই পরিমাণ টাকার মালিক আপনি বনে গেছেন । একটি কথা মনে রাখতে হবে পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে যে আদেশ করা হয় তা কিন্তু অবচেতন মন মেনে নেয় এবং সে সেই আদেশ অনুসারে কাজ করে ।

যদিও এরকম আদেশ দিতে হবে বারংবার । অবচেতন মনকে এ কথায় বিশ্বাস করাতে হবে কারণ আপনি নিজে এটি বিশ্বাস করেন যে আপনি কল্পনায় যে বিপুল পরিমাণ টাকা দেখছেন তা আপনার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে অবচেতন মন ওই টাকা পাবার জন্য অবশ্যই আপনাকে পথ বাতলে দেবে ।

নির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনার জন্য অপেক্ষায় বসে থাকবেন না কোনো পরিকল্পনা এলেই তা নিয়ে লেগে পড়ুন কাজে।এরকম পরিকল্পনা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে আপনার মনে চলে আসতে পারে ‘ অনুপ্রেরণা’র আকারে।এ অনুপ্রেরণাকে অসীম বুদ্ধিমত্তার

কোনো ডাইরেক্ট টেলিগ্রাম কিংবা মেসেজও বলা চলে।একে সম্মানের সঙ্গে ব্যবহার করুন এবং পাওয়ার মাত্র একে নিয়ে কাজে লেগে যান।ব্যর্থ হলে তা আপনার সাফল্যের জন্য ভয়ানক হয়ে উঠবে । ছয়টি পদক্ষেপের চার নম্বরে বলা হয়েছে আপনার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য নির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা তৈরি করুন এবং পরিকল্পনা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে নেমে পড়ুন কাজে।

নির্দেশনাবলির সারাংশ 

এ পোসটি আপনি পড়ছেন কারণ আপনি জ্ঞান আহরণ করতে চান । এটি আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আপনি এ বিষয়ের একজন ছাত্র । আপনি যদি শুধু ছাত্রই হন সুযোগ থাকে আপনি যা জানেন না তা করতে পারবেন । তবে যেসব নির্দেশ বা পরামর্শ দেয়া হবে তা যদি আপনি অবহেলা করেন কিংবা অনুসরণ করতে অস্বীকৃতি জানান তাহলে আপনি ব্যর্থ হবেন । সন্তোষজনক ফলাফল পেতে হলে বিশ্বাস নিয়ে সব নির্দেশ অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে । দ্বিতীয় অধ্যায়ে যে ছয়টি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে তার সারাংশ এখানে দেয়া হলো সঙ্গে এ অধ্যায়ের কিছু অংশও মিশ্রণ ঘটানো হলো ।

যেমনঃ

কোনো নির্জন জায়গায় চলে যান ( রাতের বেলা বিছানা সবচেয়ে ভালো ) যেখানে কেউ আপনাকে বিরক্ত করবে না । চোখ বন্ধ করুন এবং চেষ্টারে জোরে বলুন ( যাতে আপনি নিজে শুনতে পান সেই লিখিত স্টেটমেন্ট থেকে যেখানে আপনি কত টাকা আয় করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন ) । লেখা আছে ওই পরিমাণ টাকা কতদিনে উপার্জন করবেন । আপনি ওই নির্দেশগুলো পাঠ করার সময় দেখবেন ওই পরিমাণ টাকা পেয়ে গেছেন ।

বলবেন আমি বিশ্বাস করি এই পরিমাণ টাকা আমি পাব। আমার বিশ্বাস এতটাই প্রবল যে আমি এ পরিমাণ টাকা নিজের চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি আমি হাত দিয়ে টাকাটা স্পর্শ করতে পারছি । এটি এখন আমার কাছে চলে আসার জন্য অপেক্ষা করছে।

এই প্রোগ্রামটি রাতদিন সমানে চালিয়ে যান যতক্ষণ পর্যন্ত না কল্পনায় টাকাটা দেখতে পাচ্ছেন।আপনার এ স্টেটমেন্ট বা বিবৃতির একটি লিখিত কপি এমন জায়গায় রাখবেন যেটি রাতে এবং সকালে আপনার চোখে পড়ে যায়।রাতে ঘুমাবার আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে এটি পাঠ করবেন ।

মনে রাখবেন আপনি যখন এই নির্দেশনাগুলো মেনে চলছেন তখন কিন্তু অটো সাজেশনের নিয়মগুলো প্রয়োগ করছেন যাতে এ আদেশগুলো আপনার অবচেতন মনে পৌঁছে যায়।এ কথাও স্মরণে রাখবেন আপনার অবচেতন মন কেবলমাত্র আবেগ নির্ভর নির্দেশাবলী নিয়ে কাজ করবে যাতে অনুভূতি থাকবে।

আর বিশ্বাস হলো সবচেয়ে শক্তিশালী এবং উৎপাদনশীল অনুভূতি । শুরুতে এ নির্দেশগুলো মনে হবে বিমূর্ত । তবে তা নিয়ে বিচলিত হবেন না।শুরুতে যতই বিমূর্ত লাগুক না কেন নির্দেশগুলো মেনে চলুন । তবে কিছুদিন পরে এগুলো আর বিমূর্ত মনে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *